বস্ত্র এবং ফ্যাশন ডিজাইনের ক্ষেত্রে বোতাম (ইংরেজি: button) হচ্ছে একটি ছোট চাকতি আকৃতির বস্তু বিশেষ।বোতাম পর্তুগিজ ভাষার সব্দ; প্রায় ৫০০০ বছর পূর্বে মহেঞ্জোদারোতে সাগরের শামুকের খোল দিয়ে বোতাম তৈরি হতো। মহেঞ্জোদারোতে প্রত্নতাত্ত্বিক খননে এ ধরণের বোতাম পাওয়া যায়। এই বোতামগুলোর মাঝেও ফুটো ছিলো যা বর্তমানের বোতামেও আছে।
বোতামগুলো অলঙ্কার হিসেবে ব্যবহৃত হতো; কাপড় আটকানোর জন্য নয়। এটি সাধারণত গোল হয়; তবে অন্যান্য আকৃতিরও হতে পারে।যেমন; ৩কোনা, চতুরভুজ, তারা ইত্যাদি। সচারচর কাপড়ের কোনো অংশ ঢেকে রাখতে বোতাম ব্যবহৃত হয়; এবং কিছুক্ষেত্রে সৌন্দর্যবর্ধনের অলঙ্কার হিসেবেও এর ব্যবহার স্বীকৃত। লম্বা আকৃতির খোলা অংশের ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট স্থান পরপর বোতাম লাগানো হয়, এবং যে স্থানে বোতাম প্রবেশ করানো হয়; তা বোতাম ছিদ্র (buttonhole) নামে পরিচিত।
বিভিন্ন প্রকার বস্তুর দ্বারা বোতাম তৈরি করা হতে পারে। এর মধ্যে কিছু আছে প্রাকৃতিক; আবার কিছু আছে কৃত্রিম। প্রাকৃতি পদার্থগুলোর মধ্যে আছে হাড়, শিং, আইভরি, শামুক বা ঝিনুকের খোলস, কাঠ, নারকেলের খোলস, ইত্যাদি। আর কৃত্রিম পদার্থগুলোর মধ্যে আছে সেলুলয়েড, কাচ, ধাতু, ব্যাকেলাইট, প্লাস্টিক ইত্যাদি। শক্ত প্লাস্টিক হচ্ছে বোতাম তৈরির সবচেয়ে সাধারণ কাঁচামাল। অন্যান্য পদার্থগুলো মূলত বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।বোতাম সংক্রান্ত কিছু মানুষের ক্ষেত্রে একপ্রকার মানসিক ভীতি কাজ করে, যা কোউমপোউনোফোবিয়া (koumpounophobia) নামে পরিচিত
.
বোতাম শিল্প- আদ্যপ্রান্ত
.
আমরা পৃথিবীর ২য় বৃহত্তম তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক । তাই আমদের দেশে বোতাম এর প্রচুর চাহিদা রইএছে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত তা বাইরেথেকে আমদানি করতে হত।কিন্তু এখন বাস্তবতা ভিন্ন। দেশেই এখন মানসম্মত বোতাম তৈরি হচ্ছে। তা দিয়ে দেশের পোশাক কারখানাগুলোর চাহিদার ৬০ শতাংশই এখন পূরণ হচ্ছে।
আর এ কাজ করতে গিয়ে দেশে বোতাম তৈরিও এখন একটি বড় শিল্প খাত হিসেবে গড়ে উঠেছে।ছোট-বড় মিলিয়ে ৪৫টি প্রতিষ্ঠান এখন দেশে বোতাম বানাচ্ছে। বোতাম প্রস্তুতকারী কারখানাগুলো মূলত গাজীপুর; সাভার ও আশুলিয়ায়। কিছু কারখানা আছে চট্টগ্রাম ও নারায়ণগঞ্জে। এসব কারখানায় কাজ করছেন প্রায় আট হাজার শ্রমিক। (BGMEA) বিজিএমইএর হিসাবে, দেশের পোশাক কারখানাগুলোতে প্রতি মাসে আড়াই হাজার কোটি টাকার ১৯ ধরনের সহায়ক সরঞ্জাম (এক্সেসরিজ) লাগে। এর একটি বোতাম।
বোতামশিল্পের মালিকেরা বলছেন, বিশ্বে যত ধরনের বোতাম তৈরি হয়; তার ৯৫ শতাংশই এ দেশে তৈরি করা সম্ভব; সে ধরনের প্রযুক্তি দেশে রয়েছে। প্রতি মাসে ১২০ থেকে ১৩০ কোটি টাকার বোতামের চাহিদা রয়েছে; এর মধ্যে ৬০ শতাংশই দেশের বোতাম প্রস্তুতকারীরা পূরণ করে। টাকার অঙ্কে তা ৭০ কোটি।
Writer: Niloy Kundu Bijoy
BGMEA University of Fashion & Technology
Textile Engineering and Management
Batch-201, id 201-049-811
You may also read